আলট্রাসনোগ্রাম করতে কত টাকা লাগে - গর্ভবতী আল্ট্রাসনোগ্রাফি খরচ কত?

 আলট্রাসনোগ্রাফি কিপ্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো জানতে চেয়েছেন যে আলট্রাসনোগ্রাম করতে কত টাকা লাগে প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল অথবা ক্লিনিক ভেদে আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষার খরচ আলাদা হতে পারে। এবং ভিন্ন ভিন্ন আলট্রাসনোগ্রাম রয়েছে যার খরচ ভিন্ন ভিন্ন চলুন জেনে নেওয়া যাক।

আলট্রাসনোগ্রাম করতে কত টাকা লাগেপ্রিয় অডিয়েন্স আপনারা যদি এ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন। তাহলে জানতে পারবেন গর্ভবতী আল্ট্রাসনোগ্রাফি খরচ কত, আলট্রাসনোগ্রাম করলে কি কোন ক্ষতি হবে। আলট্রাসনো করে গর্ভের কি সন্তান আছে। ছেলে না কি মেয়ে তা জানা যায়, চলুন দেরি না করে বিস্তারিত জেনে আসি।

ভূমিকা

রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আল্ট্রাসনোগ্রাফি এমন এক প্রযুক্তি, যেটার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার পর্দার (স্ক্রিন) ছবি বিশ্লেষন করে রোগ নির্ণয় কিংবা গর্ভস্থ শিশুর অবস্থা বা অবস্থান নির্দেশ করতে সক্ষম হন। এছাড়াও এর সাহায্যে লিভার, স্প্লিন বা প্লিহা, কিডনি, অগ্ন্যাশয়, পাকস্থলী, পিত্তথলি, চক্ষু, থাইরয়েড, মূত্রথলীসহ।
নারী ও পুরুষের যৌনাঙ্গের নানাবিধ রোগ সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব। আজ আমরা জানবো আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সম্পর্কে যা জানলে আপনার উপকারে আসবে। চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।

আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে কত টাকা লাগে - গর্ভবতী আল্ট্রাসনোগ্রাফি খরচ কত

হাসপাতাল অথবা ক্লিনিক ভেদে আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষার খরচ আলাদা হতে পারে তবে সাধারণত সাদা কালো 2D আলট্রাসনোগ্রামের ক্ষেত্রে খরচের পরিমাণ ৮০০ থেকে ২৫০০ পর্যন্ত হতে পারে। সব থেকে বড় কথা ভিন্ন ভিন্ন আলট্রাসনোগ্রামের খরচ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে, চলুন দেখে নেওয়া যাক ভিন্ন ভিন্ন আলট্রাসনোগ্রামের খরচ সম্পর্কে।
 

             Test Name

Test Price

USG W/A

1200 taka

USG W/A/KUB/PVR

1700 taka

USG TVS

1500 taka

USG Penis/testes/scrotum

1800 taka

Anomaly Scan With Doppler

2300 taka

ABVS Single Breast with Ultrasound

2500 taka

USG/Brest

1500 taka

আল্ট্রাসনোগ্রাম কি খালি পেটে করতে হয়

বর্তমানে রোগনির্ণয়ের ক্ষেত্রে আলট্রাসনোগ্রাফি একটি বহুল জন প্রিয় প্রচলিত প্রক্রিয়া। রোগনির্ণয়ে জন্য আলট্রাসনোগ্রাফির ব্যাপক ভূমিকার কথা আমরা জানতে পাই। বিভিন্ন রোগে রোগীরা যখন চিকিৎসকের কাছে যান। তখন তার নিচের পেট (Lower Abdomen), ওপরের পেট (Upper Abdomen) বা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আলট্রাসনোগ্রাফি করার পরামর্শ দিতে দেখা যায় ডক্টর কে।
কোন ধরনের আলট্রাসনোগ্রাফি তার উপর নির্ভর করে। যদি পাকস্থলীর আল্ট্রা সনো করা হয় তাহলে খালি পেট এ (নূন্যতম ৪-৫ ঘন্টা)  থাকা ভাল। আর তখন ১/২ থেকে ১ লিটার পানি খেয়ে প্রাশাবের চাপ করতে হয়। এবং প্রশাব এর থলি সম্পূর্ণ হলে পরীক্ষা করতে হবে। 

আলট্রাসাউন্ডের সময় আমরা একটি সাউন্ড বা শব্দ ব্যবহার করি। একটি ছোট ডিভাইসের মাধ্যমে রোগীর শরীরের ভেতরে শব্দ ঢুকাই। শব্দ ঢুকিয়ে আমরা ছবি নেই। শব্দ ঢুকিয়ে বিভিন্ন ছবি দেখে এর মাধ্যমে রেডিওলজি ডক্টর রোগ নির্ধারণ করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করার নিয়ম - গর্ভাবস্থায় প্রথম আল্ট্রাসনোগ্রাম কোন মাসে করা উচিত


বর্তমান সময়ে অধিকাংশ চিকিৎসক গর্ভাবস্থার ৬ থেকে ৯ সপ্তাহের মধ্যে প্রথম প্রেগনেন্সি প্রোফাইল টেস্ট করতে বলে। এতে কিছু তথ্য বুঝা যায় যে ভ্রুনের প্রথম হৃদ স্পন্দন ৫ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে সনাক্ত করা যায়,গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করার জন্য,ভ্রুনের হৃদস্পন্দন বা হার্টবিট জানতে শিশুর গর্ভকালীন বয়স নির্ধারণ করা সম্ভাব্য এবং ডেলিভারি ডেট যানা যায়।

বর্তমান সময়ের যে পরিস্থিতি এর জন্য অধিকাংশ চিকিৎসক গর্ভাবস্থায় তিনবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দিয়ে থাকে।

 প্রথম আলট্রাসনোগ্রাম ---

প্রথম গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে আলট্রাসনোগ্রাম করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। ডাক্তার আপনাকে সাধারণত গর্ভাবস্থার ৯ - ১৪ তম সপ্তাহে প্রথম আলট্রাসনোগ্রাম করানোর পরামর্শ দেয়। এই সময়ে পরীক্ষা করালে সাধারণত সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়। গর্ভধারণের পর বেশি আগেভাগে আলট্রাসনোগ্রাম করালে সঠিক ফলাফল না-ও আসতে পারে।

প্রথম আলট্রাসনোগ্রামে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে।
  • আপনি কত সপ্তাহের গর্ভবতী
  • ভ্রুনের হৃদস্পন্দন বা হার্টবিট জানা যায়
  • গর্ভে যমজ কিংবা একাধিক শিশু আছে কিনা তা জানা যায়
  • গর্ভের শিশু ঠিকমতন বেড়ে উঠেছে কিনা
  • শিশুর ডেলিভারি সম্ভাব্য ডেট জানা যায়
  • এ ছাড়া শিশুর কিছু শারীরিক অবস্থা নির্ণয় করা যায়। যেমন: মেরুদণ্ড ঠিকমতো বন্ধ না হওয়া (স্পাইনা বিফিডা}
দ্বিতীয় আলট্রাসনোগ্রাম --

গর্ভাবস্থায় ১৭ থেকে ২২ তম সপ্তাহে দ্বিতীয় আলট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দিয়ে থাকে এ সময় আলট্রাসনোগ্রাম করলে এ সময় শিশুর মুখমণ্ডল পেট নাড়ি ভুড়ি হাত-পা কিডনি হাড় ব্রেন ও স্নায়ুতন্ত্র খুঁটিনাটি সবকিছুই বুঝা যায়। যেমন --
  • গর্বের শিশুর আকার ওজন কতটুক।
  • শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে গড়ে উঠছে কিনা।
  • শিশুর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হারে চলছে কিনা।
  • গর্ভের শিশুর কোন ধরনের ত্রুটি বা অ্যানোমালি আছে কিনা।
  •  শিশুটি ছেলে নাকি মেয়ে ইত্যাদি বোঝা যায়।
তৃতীয় আলট্রাসনোগ্রাম --

গর্ভাবস্থায় ৩৫ থেকে ৩৭ সপ্তাহের তৃতীয় বার আলট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দিয়ে থাকে ডক্টর এর কারণ প্রসবের আগে গর্বের শিশু ও গর্ভে ফুলের অবস্থান দেখে নেওয়ার জন্য এজন্য। যে ডেলিভারির জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারে ডাক্তার ।
  • গর্ভফুল বা প্লাসেন্টার অবস্থান। প্লাসেন্টার অবস্থান স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে নেমে আসলে ‘প্লাসেন্টা প্রিভিয়া’ নামক মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে সিজারের সাহায্যে ডেলিভারিসহ বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন হতে পারে।
  • গর্ভের ভেতরে শিশু লম্বালম্বি, আড়াআড়ি অথবা কোণাকুণি—কোন অবস্থানে আছে। নরমাল ডেলিভারির জন্য উপযুক্ত অবস্থানে না থাকলে নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে শিশুর অবস্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করা হতে পারে। অন্যথায় সিজারের প্রয়োজন হতে পারে।
  • গর্ভের শিশুর চারপাশে থাকা ‘অ্যামনিওটিক তরল’ এর পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করা হয়৷ এটি পরিমাণে বেশি বা কম হলে গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিতে পারে এবং ডেলিভারির সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।
  • এ ছাড়া শিশু গর্ভের ভেতর ঠিকমতো নড়াচড়া করছে কি না সেটাও দেখা হয়।
  • অন্যান্য স্ক্যান

আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে কি কি ক্ষতি হয় - আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে কি বাচ্চার ক্ষতি হয়

আল্ট্রাসনোগ্রাম সিনোগ্রাম আল্ট্রাসাউন্ড সনোগ্রাফি ইত্যাদি কয়েকটি নামে পরিচিত। আল্ট্রাসনোগ্রাম সাধারণত অতি উচ্চ শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে শরীরের অভ্যন্তরে অঙ্গ পতঙ্গের ছবি দেখে রোগ নির্ণয় পদ্ধতি এটি শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে। কিন্তু এটি শরীরের বাড়তি কোন ক্ষতি করে না।
সে কারণেই মাতৃগর্ভের শিশুর অবস্থান ও তার সুশাস্য সম্পর্কে তথ্য পেতে আলট্রাসনোগ্রাম করা বেশ প্রয়োজন। যদিও প্রচলিত ধারণা যে আল্ট্রাসনোগ্রাম পেতে করা হয় কিন্তু শরীরের বিভিন্ন অংশের আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়। আল্ট্রাসাউন্ড মানে এমন শব্দ, যা সাধারণ মানুষ কানে শুনতে পায় না। রোগ নির্ণয়প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত এই শব্দতরঙ্গের মাত্রা থাকে ২ থেকে ১৮ মেগাহার্জের মধ্যে।

আলট্রাসনোগ্রাফি করালে কি গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে। আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষায় গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গর্ভাবস্থায় এই পরীক্ষা করানো নিরাপদ। এই পরীক্ষায় কোনো ধরনের ক্ষতিকর রেডিয়েশন ব্যবহার করা হয় না। তাই আমরা বলতে পারি আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে মা এবং গরমের শিশু এর কোন ক্ষতি হবে না।

আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ছেলে না মেয়ে বোঝার উপায়

একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভের সন্তান মেয়ে হবে কি ছেলে এ নিয়ে তার পরিবারের সকলকেই ভীষণ চিন্তিত করে তুলে। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসকের পরামর্শে একটি আলট্রাসনোগ্রাম করলে তা বুঝা যায়। যে গর্বের সন্তান ছেলে না মেয়ে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই। গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের গঠন হলে আল্টাসনোগ্রামর রিপোর্টের মাধ্যমে বুঝা যায় ছেলে কি মেয়ে।

টেকনোলজিস্ট এই যুগে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্বে সময় পর্যন্ত ১০০% নিশ্চিত হওয়া যাবে না সন্তানের লিঙ্গ সম্পর্কে রিপোর্ট নির্দিষ্ট কিছু বিষয় বস্তু বিবেচনা করে বাচ্চার জেন্ডার নির্ধারণ করা যায়। যেমন

গর্ভবতী মায়ের রক্ত চাপ -- চীনের এক লুইয়াং শহরে আট বছর গর্ভবতী মহিলাদের উপর গবেষণা করে জানায় যে কর্মের সন্তান ফেলে না মেয়ে তা বোঝার সবচেয়ে উপায় মায়ের রক্তচাপ গর্ব অবস্থায় রক্তটা ( ১৪০BPM এর ) কম থাকলে মেয়ে সন্তান এবং গর্ভ অবস্থায় মায়ের রক্তচাপ বেশি থাকলে ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

হার্টবিট ও ভ্রুন -- গর্ভের ভ্রুনের ও হার্টবিট রেড মিনিটে ১৪০ স্পন্দনের বেশি হলে মেয়ে এবং কম হলে ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

রিপোর্টের চিহ্ন -- আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনের রিপোর্টের বেশ কিছু সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে এ সকল ট্রেনের নির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে যা বার্তা লিঙ্গ প্রকাশ করে।

আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ছেলে না মেয়ে বোঝার উপায় হল,যদি রিপোর্টের মধ্যে আপনার ডেসক্রিপশন অপশনে যদি কোথাও লেখা থাকে Gender-m/Gender boy তাহলে আপনি বুঝে নিতে পারেন আপনার গর্ভের সন্তানটি হতে যাচ্ছে ছেলে ।

আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট এর মধ্যে যদি আপনি কোথাও দেখতে পারেন Gender-N/ Gender girl তাহলে আপনি বুঝে নিতে পারেন আপনার গর্ভের সন্তানটি হতে চলেছে মেয়ে।

শেষের কথাঃ আলট্রাসনোগ্রাম করতে কত টাকা লাগে

প্রিয় পাঠক উপরের তথ্যগুলো পড়ে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন আলতাসোনোর খরচ কত এবং কখন আলট্রাসনো করতে হয় এবং কিভাবে করতে হয়। এ পোস্টটি পড়ে যেতে পেরেছেন যেটা আপনাদের উপকারে আসবে।গর্ভাবস্থায় একজন নারীর সব সময় পরিবার, কর্মক্ষেত্রসহ সবার সব ধরনের সহযোগিতা, পাশে থাকা, ভালোবাসা ও যত্ন নেয়া প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি নারীর জীবনে পূর্ণতা আসে মাতৃত্বে। আতঙ্কিত না হয়ে গর্বাবস্থার পুরো সময়টা উপভোগ করুন। অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাহারাব্লগ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url