দাউদের এন্টিবায়োটিক ও পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা

কাশির জন্য মোনাস ১০প্রিয় পাঠক আপনাদের অনেকের জানা নেই দাউদের এন্টিবায়োটিক ও পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত। তাই আপনার ও যদি এমন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমার আজকের এই আর্টিকেলটি মন দিয়ে পড়ুন। কেননা আমার আজকের এই আর্টিকেল এর মূল বিষয় হলো দাউদের এন্টিবায়োটিক ও পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। তো আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে চলুন শুরু করা যাক দাউদের এন্টিবায়োটিক ও পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা সম্পর্কে।
দাউদের এন্টিবায়োটিক
আমার এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি আরো ভালো করে জানতে পারবেন দাউদের এন্টিবায়োটিক ও পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা সম্পর্কে।

দাদ কেন হয়

দাদ কেন হয়? সাধারণত ছত্রাকের কারণে দাউদ হয় । যেখানে আলো বাতাস পায় না, ভেজা অথবা স্যাঁতসেঁতে জায়গায় ছত্রাক জন্মায় । অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন কাপড় ব্যবহার করলে ও সংক্রামক ব্যাক্তির পোশাক পরিধান করলে দাউদ হয়। একজন আক্রান্ত ব্যক্তি অথবা সংক্রমিত প্রাণী (সাধারণত কুকুর বা বিড়াল), দূষিত মাটি ও দূষিত বস্তু থেকে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন।

দাদ এর চিকিৎসা

আপনি যত দ্রুত সম্ভব দাদ এর চিকিৎসা শুরু করে দিন। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে যাবেন। যাতে আপনার এই দাদ এই রোগটি শরীরে অন্য কোথাও ছরিয়ে যেতে না পারে। আর আপনার প্রভাবিত স্থান এবং এই দাদ এর ছড়িয়ে পড়ার তীব্রতার ওপর এ এই চিকিৎসার নির্ভর করে তবে এন্টিফাঙ্গাল ঔষধ গুলি ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি রোধক কাজ করে এবং সম্পূর্ণ রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।


এই এন্টিফাঙ্গাল এর অধিকাংশ ক্ষেত্রে মলম, স্প্রে, পাউডার ও ক্রিম দাদ হওয়া স্থানে লাগালে দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে। তবে আপনার যদি পা অথবা কুঁচকির তে দাদ হয় তাহলে আপনি এন্টিফাঙ্গালের ক্রিম এবং পাউডার বা মলম ব্যবহার করতে পারেন। নিচে এর নাম দেওয়া হল --
  • টারবিনাফিন ।
  • ক্লোট্রিমাজোল ।
  • কেটোকোনাজোল ।
  • মিকোনাজোল ।
তবে আপনার নখে যদি দাদ হয় তবে এর জন্য সিক্লোপিরক্স নামক এই এন্টিফাঙ্গাল ঔষধ এক সঙ্গে মিশিয়ে নখের ভিতর নিতে হয়। আবার আপনার যদি দেহের অনেক জায়গায় এই দাদ ছড়িয়ে পড়ে তখন আপনার এন্ট্রি ফাংগাল ঔষধ খেলে হবে না। আপনার যদি মাথার তালুতে দাদ দেখা দেয় তখন ক্রিম বা পাউডার এ রোগ নিরাময় করা সম্ভব নয় । এজন্য আপনাকে ৩ থেকে ৪ মাস এই ঔষধ গুলো ফেলে সংক্রমণ সারে। নিচে ঔষধ গুলোর নাম দেওয়া হল --
  • টারবিনাফিন ।
  • ফ্লকোনাজন।
  • ইট্রাকোনাজল।
  • গ্রিসোয়োফালভিন।
আপনি মাথার দাদ এর জন্য এই ঔষধ গুলো সেবন করতে পারেন। তবে এর পাশাপাশি আপনি সেলেনিয়াম সালফাইড এবং কেটোকোনাজোল মিশ্রিত আছে এমন এন্টিফাঙ্গাল শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই এই ঔষধ গুলো সেবনের পূর্বে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ

দাদ হলে আপনাকে খাবার দিয়ে বিশেষ ভাবে নজর রাখতে হবে। আপনি যদি এই খাওয়ার গুলো এড়িয়ে চলতে না পারেন তাহলে অনেক অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। সাথে সাথে আপনার শরীরের বিভিন্ন অংশে এই দাদ দেখা দিবে। তাই নিচে দেওয়া খাবার গুলোকে আপনি এড়িয়ে চলুন --
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার
  • চিনি এবং মিষ্টি
  • এলকোহল
  • ক্যাফেইন
  • দুদ্ধজাত
আপনি যদি এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে পারেন তাহলে আপনার এই সমস্যা অল্প সময়ে মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। 

দাউদের মলমের নাম

দাউদ এমন একটি রোগ যেটি খুবই অস্বস্তিকর একটি রোগ। এই রোগে যে আক্রান্ত হয় শুধুমাত্র সেই বুঝে এই রোগের কি জ্বালা। তাই তো দাউদ রোগ থেকে সবাই মুক্তি পেতে চায়। তবে দাউদ রোগ থেকে মুক্তির জন্য বাজারে অনেক ধরনের মলম পাওয়া যায়। তারমধ্যে কার্যকারী কিছু দাউদের মলমের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো --
  • Pevisone
  • Topicazole plus
  • Ring Guard 12 mg
  • রেনাসন ক্রিম (Renaissance cream)
  • অক্সিফান লোশন
  • Fungidal-HC 
  • ইকোনেট ক্রিম (Econet cream)
  • ক্লোপিরক্স ক্রিম (Clopirox cream)
  • ক্লোট্রিমেজোল ক্রিম
  • Terbifin
  • লুলিজল ক্রিম (Lulizol cream)
  •  ফানজাইরক্স ক্রিম (Fanzyrox Cream)
  • এন্টিফাঙ্গাল ক্রিম যেমন- Clotrimazole, Miconazole, Terbinafine, Ketoconazole ইত্যাদি।
উপরে দাউদের জন্য কিছু কার্যকারী মলমের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আপনারা যারা দাউদ রোগে আক্রান্ত আছেন তারা চাইলে এই মলম গুলো ব্যবহার করতে পারেন। এই মলম গুলো ব্যবহারে খুব তাড়াতাড়ি দাউদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

বিঃদ্রঃ -- যেকোন মলম ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।

দাদ রোগের লক্ষণ

এই দাদ রোগের অন্যতম লক্ষণ বা উপসর্গ হলো ফুসকুড়ি ও র‌্যাশ। এই র‌্যাশটি সাধারণত আংটির মতো হয়ে থাকে। তবে এই র‌্যাশ এর রং লাল হয়। আবার এই রং দেহের রং এর চেয়ে গাঢ় বর্ণের ও হয়ে থাকে।এই রোগ এ র‌্যাশের আকার ত্বকের বর্ণ পরিবর্তন এর পাশাপাশি এর উপরিভাগে ছোট ছোট আইঁশ থাকতে পারে। এই দাদ হওয়ার লক্ষণ গুলো নিচে দেখানো হলো --
  • স্থানটি ফুলে যাওয়া।
  • চুলকানি হওয়া।
  • ত্বক কিছুটা খসখসে অথবা শুকনো হয়ে যাওয়া।
  • আক্রান্ত ত্বকের ওপরে চুল বা লোম থাকলে সে গুলো পড়ে যায়। 

দাদ রোগ প্রতিরোধে করণীয়

এই দাদ রোগে যেকোনো বয়সের লোক এ আক্রান্ত হতে পারে। তবে কিছু নির্দিষ্ট হয়েছে দাদ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই এই দাদ রোগ কমাতে আপনাকে যেসব বিষয় এ সতর্ক থাকতে হবে সে গুলো নিচে দেওয়া হল --
  1. দাদ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি বা কোন পশুর সংস্পর্শে না আসা।
  2. স্যাঁত স্যাঁতে পরিবেশে দাদ রোগের প্রবণতা বেশি। তাই জিম অথবা চেঞ্জিং রুম ও পাবলিক টয়লেটে গেলে খালি পায়ে না থাকা।
  3. কোন ব্যক্তির যদি দাদ হয়ে থাকে তাহলে তার ব্যবহার্য জিনিস ব্যবহার করলে দাগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই দাদ আছে এমন কোন ব্যক্তির জিনিস বা আসবাব পত্র শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
  4. সরাসরি পশু পাখির সংস্পর্শে আসলে দাদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কোন প্রাণীর সাথে মেলামেশা করার পূর্বে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
  5. খুব টাইট জুতা পড়লে এবং অতিরিক্ত ঘাম হলে দাদ রোগ দেখা দিতে পারে। তাই আপনি এমন জুতা ব্যবহার করুন যেন বাতাস জুতার মধ্যে প্রবেশ করতে পারে।
  6. নিজেকে সব সময় পরিষ্কার রাখুন। কারণ শরীর পরিষ্কার না থাকলে আমাদের শরীরে অনেক জীবাণু বাসা বাধে। যার ফলে এই দাদ জাতীয় রোগ দেখা দিতে পারে।
  7. কোন পশু পাখির সংস্পর্শ এলে সাবান দিয়ে হাত ভালো হবে পরিষ্কার করা।
  8. আপনাকে অবশ্যই সব সময় ত্বক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

শেষ কথা: দাউদের এন্টিবায়োটিক ও পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা

প্রিয় পাঠক আপনারা এতক্ষণ দাউদের এন্টিবায়োটিক ও পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত। আশা করি আমার আজকের এই পোষ্টটি পড়ে আপনার উপকারে আসবে। আমার এই ওয়েব সাইট এ আপনাদের জন্য প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য নিয়ে বাংলা আর্টিকেল লিখে আসছি। আমার এই পোষ্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধুর কাছে শেয়ার করতে পারেন। আর যদি নতুন কোনো বিষয়ে তথ্য জানতে চান তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এতক্ষণ আমার এই পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাহারাব্লগ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url